পুষ্পের কথামালা কিম্বা আত্মকথন 

মেজাজটা কি গরম হইছে না… 

আমার লগে কয় পিরিতি করবো, আমার সাথে ভাব ভালোবাসা করবো। চু*র ধান্না নিয়ে আমায়ে ভাব ভালোবাসা দেহায়। এরম হা*য়ার পুতের অনেক ভালোবাসা দেখছি। আমার মত মাগ*রে কেউ ভালোবাসা দেহাইতে আয় না। কত দেখছি এই রহম সাহেব লাট। বাল ফালানির পর আর তাগোর দেখা পাওয়া যায় না। এহন কেউ ভাল বাসার কতা কইলে গতরডা ঝলে। মনে হয় পিডের মধ্যে কেউ মচির দলা দিছে। ভাব ভাল বাসা আমাগো কাম না। আমাগো কাম টাহা, টাহা দিবি কাম হইবো। টাহা নাই কাম নাই। মাগনা কাম করি না। ঐ পিরিত ভাল্ বাসা (ভালোবাসা) মাগনা মাল ফালানের ধান্ধা। গতর এহন পইচা গেছে। কত ব্যডা মানুষ দেখলাম! ওগর কোন মন নাই, শুধু গতর আছে। কাছে আইলে এক মিনিড টাইম নাই, আইসা দেয় লুঙ্গিডা খুইলা। ওই বাল, ল্যাডাই আছে। কি যে মনে করে… ভাবে আমার মধ্যে ঢুকতে পারলেই ওর মত আমিও খুশি। আরে ব্যক্কলের পুত ব্যক্কল। মাইয়া মানুষের মন বুঝস?  

আমার মনডা তো কবেই পুইরা গেছে। এই গতরে আমার মন নাই আছে ঝামা শরীর। ছোডকালে মায়া কইত, আমার মাইয়াডা একদম পরীর নাহান। ওরে আমি নাইকা বানামু। মায়া আমি এহন নাইকা হইছি, তয় সিনেমা আমাকে কেই দেহে না। আমাকে এহন মানুষে পাইভেটে দেহে। এহন আমি অভিনয় করি, সুখী হওয়ার অভিনয়, কামে তৃপ্ত হওয়ার অভিনয়। মিথ্যা মিথ্যা আহু করার অভিনয়। এহন গতরে ঠাহর পাই না। এতো মাইষের ছাপ, নিজেরে পাই না। হগর বেলায়, শুধু সাবান দিয়ে গতর দুই আর দুই। কি জানি কিলবিল করে, ঘেন্না লাগে। আয়নার দেহি গতরটা, কি ধবধবা ছিল, এহন মাইষের ময়লা লাগতে লাগতে মাইডা রঙ হয়ে গেছে। 

আমার কতা হুনবেন, হুইনা কি করবেন? টাহা দিবেন? টাহা দিয়ে কি করমু, টাহা আমারে সুখ দিবে? পারবাইন আমার সব স্মরণ ভুলায়া দিতে?

কি ফুরফুরা ছিলাম আমি। ঘরে থাকতো চাইত না, শুধু পারা ঘুইরা বেড়াইতাম। এহন, বাইরে গেলে ভয় করে, নিজেরে ঘরে আটকাইয়া রাখি। তহন আমার বয়স কত অইব, ১২/১৩ মনে হয়। এলাকার চেয়ারম্যানের পোলা ডালিমরে ভাল লাগতো। কি পাঙ্কু ছিল পোলাডা। রঙ বেরঙের সানগ্রাইস লাগাইত চোখে। একদিন পোলাডা, পুষ্প তরে আমার ভালো লাগে। হ, আমার আসল নামডা ছিল পুষ্প। সেদিন আমার মনডা কেমন লাগছিল, বুঝাইয়া কইতে পারমু না। সেইদিন বুঝিনাই পুরুষ মাইষের জাত না। আমার ভালো বুরা বুঝাইয়া আমাকে খাওয়ার ধান্ধা ছিল তার। কদিন আমার লগে দেখা করতে চাইল, পুরান তালুকদার বারিতে। লোকে কয়, ঐদা তালুকদার বারি। কিন্তু ওহানে কেউ থাকতো না। ভাঙাভুঙা বারিতে ডালিম, রতন, রইজউদ্দিন, হামের, বুলবুল তাস খেলতো। আমি কইছিলাম, কেন আমার ওহানে যাইয়া দেখা কওন লাগবো কেন? ও কইল, আরে বুঝাজ না, পাইভেতে কথা কমু। এহানে কতা কইলে মাইষে কি কইবো। আমারে তুই বিশ্বাস করস না। আমি তখন কইছিলাম, ‘বিশ্বাস করমু না কেন, বিশ্বাস করি তো। আমি যাবু, তয় পাঁচ মিনিডের বেশি থাকতে পারমু না, মায়া লগে ঘরের কাজ করত হইব।’ তহন বুঝি নাই বদমাইশটার আমারে ফাঁদে ফালাইছে। আমারে ঐখানে নিয়া রেপ করল। এরপর ওর বন্ধুরা কইল আমরা সব দেখছি, আমাগো করতে দিলে বেবাকরে কইয়া দিবো। আমি চিকৎার দিয়ে কইছিলাম আমার দেখার তো দেখছ, আমারে মাফ কইরা দে, আমারে ছাইড়া দে। শুনলো না পাশানগুলো, ডালিম নিচ থেইকা পাজমাজা দিয়ে আমার মুখ বাইদ্ধা ফেলল, বুঝতে আমার বাকি রইল না, সব ডালিমের প্লান। এক এক সবাই আমার উপরে ঝাপিয়ে পরলো। মইরা গেছি বইলা সব কয়টা আমারে ঐ অবস্থায় ফালাইয়া চইলা গেছিল। পরদিন আমাগের গ্রামেরা রহিমা আমাকে দেখে তার মাকে ঢেকে আমাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে। আমার বাপ মা কাছে, আমার জীবনের চেয়ে নাকি তাদের ইজ্জত বড়। পাশের বাড়ির আবুল কাকা মায়ারে কয়, আমারে নাকি ঢাহায় নিয়ে যাইবো, ঘর বাড়ির কামে লাগাইবো। আবুল কাকারে আমি হারে হারে চিনতাম। ছোট বেলা থেক্কাই আমার গায়ে হাত দিতো। ব্যডা ছিল হার লুইচ্ছা। কিন্তু কি করতাম আমি, আমার আর জাওনের জায়গা ছিল না। আবুল কাকা আমারে আইন্না বিক্রি কইরা দিল এই বেশ্যাপারায়। আবুর কাকা থেকে শুরু কইরা কতজন আমায় রেপ করছে গুইন্না শেষ করতে পারমু না। এখন আর রেপ করা লাগে না। আমি খদ্দের ডাইকা নিজেই শুইয়া পরি। শুধু তকে তকে থাকি, কুন্দিন যদি ডালিমে দেখি, সেদিনই হইবো ডালিমের শেষ দিন। আমার জীবনটা একদম পুরাই শেষ কইরা দিসে খান*র পুতে। গ্রামে বেবাকে জানতো ডালিম আর তার লোকজন আমার সর্বনাশ করছে। কিন্তু ভাব যেমন, অপরাধ ডালিম করে নাই, সব আমি করছি। সব কয়টা বদমাইস। সব পুরুষ মাইনষেরে আমাত চেনা আছে। এহন কেউ ভাল্ বাসা কথা কইলে গতর জলে। আমি ভুইলা গেছি আমার নাম পুষ্প। আমি এহন বকুল, পদ্ম, জবা, শিউলি, শেফালি কিন্তু পুষ্প না। পুষ্প মইরা গেছে, সে এহন জলজ….